ছবি
অজিত অধিকারী
গোয়ালপাড়িয়া গানের নাখান জাগি ওঠে ব্রহ্মপুত্রের সাকাল
খানেক দূরত ঘন বনখ্যাত হরিনগুলা ছবির নাখান
ডেনা মেলি উড়ি যায় পানকৌরী
মুই খালি শিলংসুন্দরীর কথা ভাবঙ
কত ঢক করি কঙ মোর ব্যাক্তিগত ব্যাথা
উপরোত পাহাড়,নিচ দিয়া বয়া যায় সুতার নাকান জল
পাহারোত কত নাকান গছ
গছগুলা শুষি নেয় মোর যত নীল
ভাল নাগে মোক যখন দ্যাখঙ
পাকদন্ডী ঘাটা দিয়া উড়ি যায় জীবনানন্দের গাংচিল
আমপুরি
রমেন বর্মন
মাও মোর আমপুরি
এই যে দীঘিলা ঘাটা
ওদি ওদি ওদি যা তোর যমপুরী...
তুই না কইস মোক নিগির আইসে
একেনা 'চুপ' কথা কয়'য়া
গেইচে
এই যে তোর নাটি
এই যে নগর হাটের হাটি
খালি একান চাটি
যেকেনা চলি গেইল ওকিনায় সব খাটি...
হিসাব করি দ্যাকোং
খালি ছাই আর মাটি...
মা মোর
জয়ন্ত রায়
কুণ্ঠে হারায় গেল মা তুই
মোক একলায় রাখিয়া,
বিতে ছে মোর দিন রাতি লা
খালি মা তোর কাথা ভাবিয়া।
তোক দেখিবা নাপায়া মা গো
মোর মনডা ছাপেছে,
মা তোর কাথা মনত ভাবিয়া
দুইডা চখুতে মোর জল আসেছে।
মাথাডা সতরায় আদর করিয়া
যেলা নিসিলো তুই মোক কলাত,
অইলা স্মৃতি এলাও মা মুই
ফম রাখিসু মোর মনডাত।
নিন্দিবা যেবিলা যাসু মুই
মোর ঘরের বিছানা খানত,
সেলায় তোক মুই দেখা পাছু
মা মোর নিন্দের স্বপনত।
আয় না মা তুই ফিরিয়া একবার
রহ না তুই মোর কাছত,
মনত মোর সুখ না লাগে
এলা নাই যে মা তুই পাসত।
স্নেহ মমতায় আছে ভরা
মা তোর ওই সুন্দর মনত,
খুঁজিয়া বেড়াছু মা তোক
মুই এক অচেনা নয়া দেশত।
ছাড়াছাড়ি
পূজা রায়
সেই যে গেলু ছাড়ি
না দেখিলু ফিরি
রাইতে দিনে মনের আয়নাত
ভাসে তোমার ছবি।
মিষ্টি কথায় মোক ভোলেয়া
মনটা নিলু কারি
মনত দাগা দিলু তুই
অন্তর যায় জ্বলি।
রইয়া রইয়া কান্দোং মুই
তোমার নাম ধরি
পুরান দিনের স্মৃতি গিলা
মনত ওঠে ভাসি।
তাংও ভাল পাং তোক
যতয় দুঃখ দিস
শত কস্ট দিস মোকে
তুই ভালে থাকিস
ধারাবাহিক উপন্যাস
হালুয়ার সংসার
রোহিত বর্মন
মজিবরের হালের গরু
-----------------------------
সগে ঋণত গেইল, মজিবর আর পায় না চার জনের সংসার চালের! নুন আনতে পান্তা ফুরায়, তারে মধ্যোত দুই দুইটা ছাওয়ার লেখা পড়ার খরচ। আমিনারো দেহা খান ভাল নোমাঞ একলায় আর কতলা কামাই করে মজিবর। আইতোত নিন আইসে না এইলা কথা ভাবিয়া। আপায় উপায় নাই মাথা চক্রর দেয় জালায় যন্ত্রণায় দেহা খানত জোড়ো নাই।
আতি পোহাইলে নৃপতি আসিবে সুদালি টাটা বুলির, একটাকাও তো নাই ঘরত হাত ফাকা ক্যাকরি দিম কালি যে উয়ার সুদের টাকা। নৃপতি যে লোক টাকা না দিলে তো মানির নায়।
সাকাল সাকাল নিন থাকি নাই ওঠিতে নৃপতি আসিল কিরে মজিবর টাকা দে সুদের আর দেরি না করিস তোর মেলা বাহানা দেখলুং শুনলুং আর না ভাইও আজি টাকা দে না হইলে মুই যাবার নং রে । সুদে আসলে ভাইল্লা হইছে ভাইও আজি হিসাব বুঝি নিয়ায় যাইম ! মজিবরের চোখ মুখ লাল হয়া গেইল কি করিবে এলা ভাবিয়া কুল পায় না চিন্তায় চিন্তায় বসি পড়িলেক মজিবর। নৃপতি এমন আও শুনিয়া মজিবরের মাইয়া আমিনাও ঠস খায়া গেইল। আমিনা মজিবরের বগলত আসিয়া বসিল আর কয় এলা কি করমো ক্যাংকরি এমার পাইসা দিই। মজিবরের মুখ শুখি যাবার ধরিলেক দেহা ঝসি নালকাল হয়া গেইল কি করিবে এলা ভাবির পায় না। নৃপতি বসি অইতে অইতে চিংকরি উঠিল কি রে মজিবর কানত করা শোনধায় না মুই কি এটে সারা দিন বসি থাকিম, টাকা দে না হলে জিনিস দে আর তাও যদি না থাকে তোর তাহলে তোর চোদ্দ পুরুষের বাস্তুু ভিটা মাটি বেছে দে রে মজিবর মুই আর দেরি করির না পাং। মজিবর আর আপায় উপায় না পায়া ঘোষা হয়া কয়া ফেলাইল নৃপতি দা মোর হালের গরু দুইটায় নিয়া যা। আমিনা এইখান আও শুনিয়া চকটি উঠিল আর মজিবরক কয় হালের গরু দুইটা দিলে তোমা করিবেন কি? ক্যাং করি আবাদা করিবেন। মজিবর কয় দেখ আমিনা তাছাড়া আর কোন উপায় নাই হামার থেকে হালের গরুয় দেওয়া খাইবে হামাক! হালের গরুর কথা শুনিয়া নৃপতি গরু দুইটা হাত নিল ওমন দেখিয়া আমিনা ডোকরি কান্দির ধরিল আর হুশ ফিরি আসলে আমিনা যায়া নৃপতির দুই ঠ্যাং ধরিয়া গড়াগড়ি চালু করিলেক, মজিবর ফ্যালফ্যাল করিয়া চায়া দেখির নাগিল নৃপতি আর মাইয়া আমিনার কান্ড কৃতি কিন্তুু কি করিবে এক ভিদি মহাজনের জ্বালা আর এক ভেদি মাইয়ার কান্দন দেখিয়া মজিবরো হুশ হারা হয়া গেইল।
মহাজন নৃপতির মনত একনাও দয়া আসিল না আমিনার কাকুতি মিনতি সগ ফাও হয়া গেইল।
মজিবরের হালের গরু পায়া নৃপতি খিব খুশি হইল আর হালের গরু দুইটাক টানিতে টানিতে নিয়া যাবার ধরিল নৃপতি। গরু দুইটাও যাবার চায় না মজিবর আর আমিনাক ছাড়িয়া তাও নৃপতি টানি নিয়া যাবার ধরিল!মজিবর আর আমিনির দুই চোখ দিয়া পানি ঝড় ঝড়ে পড়িল নাগিল আর ফ্যাল ফ্যাল করি চায়া দেখির নাগিছে নৃপতি দুই পাশে দুইটা গরুক টানি নিয়া যাবার ধরিছে সরু আস্থা আবাদি ভুইন এর মধ্যে দিয়া!
চলিবে
No comments:
Post a Comment